স্বদেশ রিপোর্ট: করোনাভাইরাসের কারণে জনমানবশুন্য নিউইয়র্ক সিটির হোটেল-মোটেলের ভাড়া কমানো হয়েছে। সিটিতে বাস ভাড়া মওকুফ করা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিলে সাথে টিস্যু-পেপার ফ্রি দেয়া হচ্ছে। উবারের কো-শেয়ারিং বন্ধ রাখা হয়েছে। ইয়েলো ট্যাক্সি ড্রাইভারের মধ্যে শুধুমাত্র মেডেলিয়নের মালিক-ড্রাইভাররা রাস্তায় রয়েছেন। অন্যেরা স্বেচ্ছায় ছুটিতে রয়েছেন। কারণ, ১২ ঘন্টা ট্যাক্সি চালিয়ে ১০ ডলারও পকেটে থাকে না। যাত্রী নেই এয়ারপোর্টে। ট্যুরিস্ট নেই সিটিতে। সিটির অধিবাসীরাও কেনাকাটা করতে বাসার বাইরে যাচ্ছেন না। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহ থেকে চলা নাজুক অবস্থাকে আরো সূচনীয় পর্যায়ে নিয়ে গেল শুক্রবার স্টেট গভর্ণর কর্তৃক ‘জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাবার আহবান’ উচ্চারিত হবার পর। রোববার সন্ধ্যা ৮টা থেকে বিশেষ এই নির্বাহী আদেশটি বহাল হবে। অর্থাৎ করোনা ভাইরাস তান্ডবে শুধু নিউইয়র্ক সিটি নয় আশপাশের সকল সিটির বাংলাদেশীরা স্বেচ্ছায় গৃহবন্দিত্ব গ্রহণ করেছেন। ফেডারেল সরকার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ‘করোনা ভাতা’ প্রদানের পরিকল্পনা ঘোষণা করলেও যারা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে রয়েছেন তারা কিছুই পাবেন না। স্প্যানিশ, আফ্রিকান, পাকিস্তানীদের পরই বাংলাদেশীরা রয়েছেন সেই তালিকায়। এ শ্রেণীর কাগজপত্রহীন প্রবাসীর বড় একটি অংশ রেস্টুরেন্ট অথবা গ্রোসারি স্টোরে কাজ করতেন। রেস্টুরেন্ট থেকে এখন শুধুমাত্র ‘টেক-আউট’ অর্থাৎ অর্ডার দিয়ে খাবার বাসায় নেয়া যাচ্ছে। রেস্টুরেন্টে বসে খাবার অনুমতি না থাকায় সে সব শ্রমিকেরা বেকার। উল্লেখ্য যে, যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার জুমআর নামাজ আদায়ের শতবর্ষ পালিত হয়েছে। কখনোই সেই নামাজ বন্ধ করা হয়নি। এবারই প্রথম সকল মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে করোনাভাইরাস ঠেকানোর অভিপ্রায়ে। করোনার কারণে শিক্ষা-সমাপনী উৎসব থেকেও বঞ্চিত হবে লাখ লাখ শিক্ষার্থী। ইতিমধ্যেই গ্র্যাজুয়েশনের সকল কর্মসূচি বাতিলের নোটিশ পাঠানো হয়েছে ছাত্র এবং অভিভাবকের কাছে। জাতিসংঘের সকল কার্যক্রম এর আগেও বন্ধ ছিল। তবে এবারের মত তা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলেনি। অর্থাৎ সর্বস্তরের মানুষ গভীর এক শংকায় দিনাতিপাত করছেন জাতিসংঘের শহর নিউইয়র্কে। স্বস্তিতে নেই কেউই। কারণ, গত ৪ দিনে নিউইয়র্ক সিটিতে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সিটি স্বাস্থ্য দফতরের কর্মকর্তারা জানান। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে মারা গেছে ৪৬ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৪০৩। সারা যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা একই সময়ে ছিল ১৯৬৪০ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ২৪৬।